ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

ইসলামপুর মাদরাসা কবরস্থানে চিরসমাহিত মনজুর চেয়ারম্যান

নিউজ ডেস্ক ::  হাজারো শোকার্ত জনতার উপস্থিতিতে পৃথক দুই দফা জানাজা নামাজের পরে ইসলামপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা সংলগ্ন কবরস্থানে চিরসমাহিত হলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান শিল্পপতি মনজুর আলম।

তার প্রথম জানাজা ইসলামপুরের নতুন অফিস সংলগ্ন ফুটবল খেলার মাঠে এবং দ্বিতীয় জানাজা ইসলামপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা প্রাঙ্গনে আদায় করা হয়।

এ সময় উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। তিনি এই জনপদের একজন অভিভাবক হিসেবে সবার কাছ থেকে মরহুম মনজুর আলমের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। নিজেই ক্ষমা করে দেন, সবাইকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহবান জানান। এমপি কমলের বক্তব্যকালে অঝোরধারায় কেঁদেছে সমবেত শোকাহত জনতা।

এর আগে জননেতা মনজুর আলমের লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সটি চট্টগ্রাম থেকে গ্রামে পৌঁছলে তাকে এক নজর দেখতে ভীড় করে সব শ্রেনী পেশার লোকজন। মনজুর চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের নেতা হলেও তিনি সবার, সেটি প্রমাণিত। তার মৃত্যু শিল্পনগরীর বাসিন্দাসহ সবাইকে কাঁদিয়েছে।

স্বজন ও এলাকাবাসীকে শোক সাগরে ভাসিয়ে চিরবিদায় নিয়ে গেলেন গরীব পাগল নেতা মনজুর আলম।

জানাজার নামাজে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল করিম মাদু, ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, আবদুশ শুক্কুর মেম্বারসহ সর্বস্তরের লোকজন জানাজার নামাজে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহণ করেছে।

মনজুর আলম বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) ভোর ৫ টা বেজে ২৭ মিনিটের সময় চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি খানঘোনা এলাকার মরহুম আলী হোছাইনের ছেলে। সাংসারিক জীবনে নিজে ৬ ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের জনক।

হার্টের সমস্যা জনিত কারণে তাকে গত ১৮ জুন চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নেয়া হয়। ডাক্তারের পরামর্শক্রমে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় মঙ্গলবার (২৩ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টার দিকে স্ট্রোক করেন।

এরপর তাকে সিএসটিসি নামক একটি বেসরকারী হাসপাতালের আইসিউইতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জনগলেন বন্ধু মনজুর চেয়ারম্যান।

মনজুর আলম হার্টের সমস্যা ও উচ্চমাত্রার ডায়াবেটিস রোগি ছিলেন। চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরপর দুইবার স্ট্রোক করেছিলেন।

শিল্পপতি মনজুর আলম ১৯৯০ সালে অবিভক্ত পোকখালী ইউনিয়নের মেম্বার নির্বাচিত হন। তখন থেকে তিনি জনতার কাতারে থাকতেন। মানুষের যে কোন সমস্যায় ছুটে যেতেন। তিনি ছিলেন শোষক ও জমিদার শ্রেণির আতংক। তাকে ‘গরীবের বন্ধু’ হিসেবে জানে এলাকাবাসী।

তাই, মনজুর আলম ২০০২ সালে বিপুল ভোটে ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

২০১০ সাল পর্যন্ত অতি সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও যথাযথ দায়িত্ব পালনের কারণে তিনি ‘শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান’ স্বীকৃতি পান।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে আওয়ামী লীগের নির্ভেজাল ও নির্লোভ কর্মী ছিলেন মনজুর আলম।

পাঠকের মতামত: